ত্রিভুজ
জ্যামিতিতে তিনটি সরলরেখা দ্বারা আবদ্ধ সামতলিক চিত্রকে ত্রিভুজ বলে।যার তিনটি ছেদচিহ্ন ও তিনটি প্রান্ত থাকে। যার তিনটি কোণের
সমষ্টি ১৮০ ° বা দুই সমকোণ।
প্রকারভেদ
বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে
বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে ত্রিভুজ তিন প্রকার। যথা :
-
সমবাহু ত্রিভুজ - যে ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্যই সমান, তাকে সমবাহু ত্রিভুজ বলে ।
সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রে প্রতিটি কোণের মান ৬০° হয়।
-
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ - যে ত্রিভুজের যে-কোন দুইটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান, তাকে সমদ্বিবাহু
ত্রিভুজ বলে। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের শীর্ষকোণ ৯০° হলে অপর সমান দুইটি
বিপরীত কোণ ৪৫° করে হবে। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের সমান বাহুদ্বয়ের
বিপরীত কোণ দুটি সমান হয়।
-
বিষমবাহু ত্রিভুজ
- যে ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য তিন রকম, তাকে বিষমবাহু
ত্রিভুজ বলে। বিষমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণ-ই পরস্পরের সঙ্গে অসমান
হয়।
কোণের ভিত্তিতে
কোণের ভিত্তিতে ত্রিভুজ তিন প্রকার । যথা:–
-
সমকোণী ত্রিভুজ - যে ত্রিভুজের যেকোন একটি কোণ ১ সমকোণ বা ৯০° এর সমান, তাকে সমকোণী ত্রিভুজ
বলে।
-
সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ - যে ত্রিভুজের তিনটি কোণই সূক্ষ্মকোণ, তাকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভুজ
বলে।
-
স্থূলকোণী ত্রিভুজ - যে ত্রিভুজের যেকোন একটি কোণ স্থূলকোণ, তাকে স্থূলকোণী ত্রিভুজ
বলে।
ত্রিভুজ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিন্দু ও রেখা
শীর্ষ বিন্দু - যে তিনটি বিন্দু জুড়ে ত্রিভুজ তৈরি হয়। প্রতিটি শীর্ষবিন্দু এক
জোড়া বাহুর সংযোগ স্থল।
বাহু - ত্রিভুজের পরিসীমা যে তিনটি রেখাংশ দ্বারা সম্পূর্ণ হয় বা ত্রিভুজের
দুটি শীর্ষ বিন্দুর সংযোগ রেখাকে বাহু বলে।
মধ্যমা - ত্রিভুজের যেকোন শীর্ষ ও বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দু সংযোগকারী রেখাংশ এক
একটি মধ্যমা। ত্রিভুজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দুগামী।
ভরকেন্দ্র - যেখানে মধ্যমাত্রয় মিলিত হয়, তা হল
ত্রিভুজের ভরকেন্দ্র।ভরকেন্দ্র প্রতিটি মধ্যমাকে ১:২ অনুপাতে
বিভক্ত করে।
লম্বকেন্দ্র - ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষ থেকে বিপরীত বাহুগুলির উপর তিনটি লম্ব
সমবিন্দুগামী, এবং সেই বিন্দুটির নাম লম্বকেন্দ্র।
পরিবৃত্ত - ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষবিন্দু থেকে সমদূরত্বে অবস্থিত বিন্দুকে কেন্দ্র
করে করে তিনটি শীর্ষবিন্দুগামী অঙ্কিত বৃত্তকে পরিবৃত্ত বলে।
পরিকেন্দ্র - ত্রিভুজের পরিবৃত্তের কেন্দ্রকে পরিকেন্দ্র বলে (যে বিন্দু ত্রিভুজের
শীর্ষত্রয় থেকে সমদূরত্বে অবস্থিত)।
অন্তবৃত্ত - ত্রিভুজের ভিতরে অবস্থিত যে বৃত্ত ত্রিভুজের তিনটি
বাহুকে স্পর্শ করে থাকে, তাকে অন্তবৃত্ত বলে।
অন্তঃকেন্দ্র - ত্রিভুজের অন্তবৃত্তের কেন্দ্রকে অন্তঃকেন্দ্র
বলে।
ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল পরিমাপের
সূত্রাবলী
ক্ষেত্রফল (Area)
ক্ষেত্রফল $(A)= \frac{1}{2} \times b \times h $ বর্গ একক
(যেখানে $b$ হল ত্রিভুজের ভূমি এবং $h$ হল উচ্চতা )
সমবাহু ত্রিভুজ
উচ্চতা $(h)= \frac{\sqrt{3}}{2} \times a $ একক
(যেখানে $a$ হল সমবাহু ত্রিভুজের
বাহু )
ক্ষেত্রফল $(A)= \frac{\sqrt{3}}{4} \times a^2 $ বর্গ একক
(যেখানে $a$ হল সমবাহু ত্রিভুজের বাহু )
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ
উচ্চতা $(h) = \sqrt{a^2 - (\frac{b}{2})^2} $ একক =
(যেখানে $a$ হল সমান দুই বাহুর প্রতিটির দৈর্ঘ্য এবং $b$ হল ত্রিভুজের ভূমি )
ক্ষেত্রফল $(A)= \frac{1}{2} \times b \times h $ বর্গ একক (যেখানে $b$ হল ত্রিভুজের ভূমি
এবং $h$ হল উচ্চতা )
বিষমবাহু ত্রিভুজ
অর্ধপরিসীমা (s) $= \frac{(a+b+c)}{2} $ একক
(যেখানে $a,b,c $ হল ত্রিভুজের তিনটি বাহু )
ক্ষেত্রফল $(A) = \sqrt{s(s-a)(s-b)(s-c)}$ বর্গ একক
You May Read Also :
0 Comments